আমিন মুনশি : স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক বা স্বামীর আনুগত্য বিষয়ে অনেকে উপরের কথাকে হাদিস হিসেবে পেশ করে থাকেন। কিন্তু এ শব্দ-বাক্যে কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। সুতরাং এটিকে হাদিস হিসেবে বলা যাবে না। তবে কিছু বর্ণনায় এর মর্মার্থ পাওয়া যায়। (মুআত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকেমসহ হাদীসের আরো কিছু কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।)
একবার এক নারী সাহাবি রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন- জি, আছে। নবীজি বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস নং ৯৫২)
স্বামী-স্ত্রীর একের উপর অন্যের হক রয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে মৌলিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর স্বামীদের যেমন তাদের (স্ত্রীদের) উপর ন্যায়সঙ্গত হক রয়েছে, তেমনি তাদেরও হক রয়েছে স্বামীদের উপর। (সূরা বাকারা, ২২৯)
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিতভাবে স্বামী-স্ত্রীর হক তুলে ধরেছেন এবং স্বামীদেরকে স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। বিদায় হজের ভাষণে নবীজী বলেছেন- ‘তোমরা নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১২১৮)
সাথে সাথে নারীদেরকে স্বামীর আনুগত্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং এর ফজিলতও বর্ণনা করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- ‘নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমত আদায় করবে, রমজানের রোজা রাখবে, আপন লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৪১৬৩)
সুতরাং গুনাহের কাজ নয় এমন বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য জরুরি। কিন্তু ‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত’ এটি হাদীস নয়। (সূত্র: মাসিক আল-কাউসার)